1. m.a.roufekhc1@gmail.com : alokitokha :
খাগড়াছড়িতে বন্যায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দী ১৫ হাজার মানুষ, ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত - আলোকিত খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে বন্যায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দী ১৫ হাজার মানুষ, ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত

  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩
মো. আবদুর রউফ:
খাগড়াছড়িতে টানা ভারী বর্ষণে বন্যায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তা মোকাবেলায় ৫৫০ মেট্টিকটন খাদ্যশস্য এবং ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বন্যায় খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা, পানছড়ি, মহালছড়ি ও মানিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বুধবার কিছু এলাকা থেকে সামান্য পরিমাণ পানি নেমে গেলেও অনেক এলাকা এখনো তলিয়ে রয়েছে। দীঘিনালার ছোট মেরুং এর অনেক এলাকা ৩দিন ধরে পানির নিচে ডুবে আছে।
গত বুধবার (২ আগস্ট) থেকে টানা বর্ষণে চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বেড়ে গিয়ে ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন অফিসে ঢুকে পড়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয় ব্যবস্থা ও খাবারের জন্য কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন, পৌরসভা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। পাশাপাশি সব উপজেলাতেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ আশ্রয় ও সার্বিক সহযোগিতায় কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা শহরের গঞ্জপাড়া, মুসলিম পাড়া, মিলনপুরসহ বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও দীঘিনালা উপজেলার ছোট মেরুং, হাচিনসন পুর, পূর্ব হাচিনসন পুর, মুসলিম পাড়া, পাবলাখালীর একাংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে জেলা সদরের প্রায় ৯ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। দীঘিনালায় তলিয়ে যায় আঞ্চলিক ও জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো। সড়কে পানি উঠায় সাময়িকভাবে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে সাজেক ও লংগদু উপজেলার সাথে।
জেলা সদরের মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে আমার পুরো ঘরে পানিতে তলিয়ে গেছে। সকল আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। শুকনো কোন খাবার আমাদের ঘরে নেই।’ উত্তর গঞ্জপাড়ার বাসিন্দা মো. আলমগীর বলেন, ‘পানিতে আমার ঘর-বাড়ি সব পানিতে বন্দি। কোনরকম সাতরে সন্তান আর পরিবারকে সাথে নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্র উঠলাম। ঘরে থাকা আসবাবপত্র, খাদ্যসামগ্রী-চাল, ডাল সবই এখনো পানিতে তলিয়ে গেছে।’
এদিকে বন্যায় প্লাবিত বিষয়ে দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরাফাতুল আলম জানান, ‘বন্যা পরিস্থিতি বিষয়ে আমরা উপজেলা পরিষদ, স্থানীয় প্রশাসনসহ পরিদর্শন করেছি। বন্যায় মেরুং, কবাখালী, বোয়ালখালী ইউনিয়নের অসংখ্য পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে গরম খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৫ মেট্টিকটঅন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য যা যা করা দরকার তা করার সার্বিক চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. শাহ আলম বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি বিষয়ে তাৎক্ষণিক আমরা পৌরসভায় জরুরি বৈঠক করে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের  ব্যবস্থা করেছি। সাথে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করেছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, দূর্যোগ মোকাবেলায় খাগড়াছড়িতে ১০৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা সদর সহ সকল উপজেলায় প্রশাসন কর্তৃক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার করে তাদের খাদ্যের ব্যবস্থাসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এজন্য পুরো জেলায় প্রায় ১ হাজার মেট্রিকটঅন খাদ্য শস্য এবং প্রায় ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিছু এলাকায় সামান্য কিছু পানি নেমে গেছে কিন্তু অধিকাংশ জায়গায় পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। আমাদের লোকজন মাঠে থেকে কাজ করছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ